অনলাইন ডেস্ক:
কিশোরগঞ্জের ভৈরব রেলওয়ে জংশন স্টেশনে সিসি ক্যামেরা থাকা সত্ত্বেও ইউএনও’র মানিব্যাগ চুরির ঘটনা ঘটেছে। ঘটনার চারদিন অতিবাহিত হলেও চুরি হওয়া মানিব্যাগ উদ্ধার করতে পারেনি ভৈরব রেলওয়ে থানা পুলিশ।
খোঁজনিয়ে জানা যায়, গত ২৬ জানুয়ারি বুধবার দুপুরে আন্ত:নগর চট্রলা ট্রেনে বিশেষ কাজে ঢাকা যাওয়ার জন্য রেলওয়ে স্টেশনে আসেন ভৈরব উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মোহাম্মদ সাদিকুর রহমান সবুজ। ইউএনও’র নিরাপত্তায় নিয়োজিত আনসার সদস্যরাও এসময় সঙ্গে ছিলেন। ওইদিন চট্রগ্রাম থেকে ছেড়ে আসা ঢাকাগামী আন্ত:নগর চট্টলা ট্রেনটি ভৈরব স্টেশনে পৌঁছাতে ১ঘণ্টা বিলম্ব হয়।
ট্রেন স্টেশনে পৌঁছার পর ইউএনও মোহাম্মদ সাদিকুর রহমান সবুজ ট্রেনে উঠার সময় তার পকেট থেকে মানিব্যাগ নিয়ে দৌড়ে পালিয়ে যায় এক পকেটমার । মানিব্যাগ নেয়ার বিষয়টি ভৈরব রেলওয়ে থানার পুলিশ ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করেন। ভৈরব রেলওয়ে থানার ওসি ফেরদাউস আহাম্মেদ বিশ্বাস নিষেধ করায় রেলওয়ে কর্মচারীরা বিষয়টি নিয়ে মুখ খোলেনি প্রথমে। তবে গতকাল শনিবার রাতে রেলওয়ের বিভিন্ন কর্মচারীদের সাথে কথা বলে ইউএনও’র মানিব্যাগ চুরি হয়ার বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া গেছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন রেলওয়ে কর্মচারী জানান, বুধবার দুপুরে স্টেশনের মূল ফটক বরাবর ১নং প্লাটফর্মে ঢাকাগামী চট্রলা ট্রেনে ওঠার সময় ভৈরব উপজেলা নির্বাহী অফিসারের পকেট থেকে মানিব্যাগ চুরি করে দৌড়ে পালিয়ে যায় এক পকেটমার। প্লাটফর্মে থাকা সিসি ক্যামেরা ফুটেজে ওই পকেটমারের চেহারা তেমনটা স্পষ্ট বোঝা যায়নি বলে জানান। তবে আনুমানিক বয়স ২৮ কিংবা ৩০ বছর হবে। এছাড়াও গতকাল শনিবার রাতে ভৈরব ষ্টেশনে মহানগর গোধুলি ট্রেন বিরতিরকালে যাত্রী ওঠা নামার সময় এক যাত্রীর মানিব্যাগ নিয়ে মুল ফটক দিয়ে পালিয়ে যায় আর এক পকেটমার ।
সাধারণ যাত্রী ও স্থানীয়দের সাথে কথা বললে তারা জানান, স্টেশনে সিসি ক্যামেরা থাকার পরও ভৈরবের ইউএনও’র মানিব্যাগ পকেটমার হওয়ার বিষয়টি দুঃখজনক। প্রতিনিয়তই ভৈরব স্টেশনের একটি সংঘবদ্ধ চক্র যাত্রীদের মানিব্যাগ, মোবাইল ফোনসহ মূল্যবান জিনিসপত্র ছিনতাই ও পকেটমার করে নিয়ে গেলেও রেলওয়ে পুলিশ নির্বিকার। তারা জানান, চিহ্নিত চোর ছিনতাইকারী স্টেশনে ঘোরাফেরা করলেও রেলওয়ে পুলিশ ও রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা দেখেও না দেখার ভান করে থাকে। যাত্রী নিরাপত্তার বদলে যাত্রী হয়রানি করা আর নামে মাত্র ডিউটির সময় পাড় করেন বলে জানান তারা।
ভূক্তভোগী ভৈরব উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ সাদিকুর রহমান সবুজ জানান, ট্রেনে ওঠার মুহূর্তে পকেট থেকে মানিব্যাগ নিয়ে যায়। ম্যানিব্যাগে ৫হাজার টাকা, ক্রেডিট কার্ড ও ডেভিড কার্ডসহ প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ছিলো। এসময় ভৈরব রেলওয়ে স্টেশনে যাত্রী নিরাপত্তা নিয়ে হতাশা প্রকাশ করেন এবং স্টেশনে যাত্রী নিরাপত্তা জোরদার করার দাবি করেন তিনি। এ বিষয়ে পরর্বতীতে মামলা করবেন বলেও জানান।
এ ঘটনায় ভৈরব রেলওয়ে থানার ওসি ফেরদাউস আহাম্মেদ বিশ্বাসের মুঠোফোনে ইউএনও’র মানিব্যাগ পকেটমার হওয়ার বিষয়ে জানাতে চাইলে, ওসি ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেছেন। এবং মানিব্যাগ উদ্ধারের জন্য পুলিশ চেষ্টা করছেন বলে জানান।