শামীম আহমেদ :
কিশোরগঞ্জ জেলার বন্দরনগরী ভৈরব বাজারের বাতাশা পুট্টির তিন তলা বিল্ডিং থেকে ফেলে দিয়ে তানজিনা ইসলাম (২৬) নামের এক গৃহবধূ কে হত্যা করেছে বলে স্বামী,শুশুর ও দেবরের বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগ করেন নিহত তানজিনার বড় ভাই মাহমুদুল ইসলাম। নিহত তানজিনার স্বামীর নাম মামুদুর রহমান । শহরের ভৈরব বাজারের বাতাশা পট্টি তাদের বাড়ি। আজ মঙ্গলবার বিকেল ৩ টার দিকে গৃহবধূর স্বামীর বাসায় ঘটনাটি ঘটে। এই ঘটনায় হত্যার সম্পৃক্তের সন্দেহ হলে নিহত তানজিনার বড়ভাই মাহমুদুল ইসলাম স্থানীয় লোকজনের সহযোগিতা নিয়ে ভৈরব থানা পুলিশের কাছে সোর্পদ করেন, স্বামী মাসুদুর রহমান (৩৭), শুশুর হাজি আবুল খায়ের (৭০) ও দেবর তোফাজ্জল হোসেন (৩৫)। গৃহবধূর দাম্পত্য কলহের কারনে ঘটনাটি ঘটেছে বলে প্রতিবেশীরা জানায়। এরিপোর্ট লেখা পর্যন্ত গৃহবধূর লাশ ভৈরব থানায় আছে। গৃহবধূর বড় ভাইয়ের দাবি তাকে বিল্ডিং থেকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে হত্যা করা হয়েছে।
পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে ২০১২ সালে তানজিনা ইসলামের সাথে ভৈরব বাজারের মাসুদুর রহমানের বিয়ে হয়। তানজিনার বাবার বাড়ী পৌর শহরের চন্ডিবের এলাকায়। তাদের দুটি সন্তানও আছে। সংসার জীবনের ১০ বছর ধরেই নানা কারনে তারা স্বামী স্ত্রীর মধ্য প্রায়ই ঝগড়া হতে। আজ ২২ নভেম্বর মঙ্গলবার বিকেল তিনটায় তুচ্ছ ঘটনায় দুজনের মধ্য ঝগড়া বাঁধে। ঝগড়া চলাকালে তানজিনা ইসলাম বিল্ডিংয়ের তিনতলা বাসা থেকে পরার পর গুরুতর আহত অবস্থায় স্বামী, শুশুর, দেবর মিলে তাকে ভৈরব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করে।
এসময় গৃহবধূর স্বামী মাসুদ, শুশুর আবুল খায়ের ও দেবর তোফাজ্জল হাসপাতাল থেকে পালিয়ে যেতে চাইলে নিহত তানজিনার বড়ভাই স্থানীয়দের সহযোগিতা নিয়ে আটক করে, পরে স্থানীয় কাউন্সিলর মোমেন মিয়ার সহযোগী নিয়ে পুলিশকে খবর দেয়। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে তিনজনকে জনতার হাত থেকে উদ্ধার করে ভৈরব থানায় নিয়ে আসে।
নিহত তানজিনার বড়ভাই মাহমুদুল ইসলাম অভিযোগ করে বলেন, তার ঘাতক স্বামী ঝগড়া করে আমার ছোট বোন তানজিনাকে বিল্ডিংয়ের তিনতলা থেকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিয়ে হত্যা করে। তবে তার স্বামী একথা অস্বীকার করে বলেন, তানজিনা আমার সাথে রাগ করে তিনতলা থেকে লাফ দিয়ে নিজেই আত্মহত্যা করে।
নিহত গৃহবধূ তানজিনার বড়ভাই মাহমুদুল ইসলাম বাদী হয়ে হত্যার অভিযোগ এনে মামলা দিবে বলে জানান এবং অভিযুক্ত ঘাতক স্বামী,শুশুর,দেবর কে সঠিক তদন্তের মাধ্যমে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার দাবী করেন। তানজিনা হত্যার কঠিন বিচার চেয়ে স্থানীয় সাংবাদিকদের কাছে বক্তব্য দেন।
হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক মোছাম্মত ইসমত তাহমিনা জানান, বিকেল ৫ টার দিকে তানজিনাকে হাসপাতালে আনার আগেই তার মৃত্যু হয়। তার মাথায় ঘাড়ে গুরুতর আঘাতের চিহ্ন ছিলো।
ভৈরব থানার নবযোগদাকৃত অফিসার ইনচার্জ ( ওসি) মাকছুদুল আলম জানান, ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে স্থানীয় জনতার হাত থেকে তিনজনকে উদ্ধার করে ভৈরব থানায় নিয়ে আসা হয়। তাদে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে প্রকৃত ঘটনা জানার জন্য । তাদের বিরুদ্ধে নিহতের পরিবারের লোকজন লিখিত অভিযোগ দায়ের করলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।